Lifestyle

Attitude is Everything | Nick Vujicic | Bangla Motivational Biography

নিক বুজিছিস যাকে তার বক্তব্যের জন্য পুরো বিশ্বের মানুষ চিনে তিনি কিন্তু কোনো হাত পা ছাড়াই জন্মগ্রহন করেছিলেন। ইসস.. যদি আমি দেখতে একটু সুন্দর হতাম, ইসস.. যদি আমি সবার সাথে স্মার্ট ভাবে কথা বলতে পারতাম, ইসস…. যদি আমার মধ্যে কোনো একটা স্পেশাল টেলেন্ট থাকতো তাহলে হয়তো আমিও জীবনে কিছু করিয়ে দেখাতে পারতাম। নিকের পরিস্থিতির সাথে তুলনা করলে এই অজুহাত গুলো শুনতে সত্যিই হাস্যকর লাগে। জন্ম থেকে যে মানুষটার কোনো হাত পা নেই সেই মানুষটা আজ “Life Without Limbs” এবং “Attitude is Altitude” দুটি কোম্পানির মালিক এবং তার সম্পদ প্রায় ৫ লাখ আমেরিকান ডলার। সবথেকে বড় ব্যপার হলো নিক আজ কোটি কোটি মানুষের জীবনের অনুপেরণার উৎস।

আমাদের দুটো হাত থাকা সত্যেও আমরা কষ্ট থেকে বাচার জন্য অজুহাত নামক আর একটি হাত ব্যবহার করে থাকি। আর সেখানে নিকের একটাও হাত না থাকা সত্বেও নিক কিন্তু অজুহাত টা ব্যবহার করে নি। আর সেই কারনেই আজ সে কোটি কোটি মানুষের অনুপেরনার উৎস।

১৯৮২ সালে ৪ ডিসেম্বর, অস্ট্রেলিয়ার মেলবর্ন শহরে জন্মগ্রহন করেন নিক। “টেট্রা অ্যামেলিয়া” রোগের কারনে নিক কোনো হাত পা ছাড়াই জন্মগ্রহন করে। তার নিজের লেখা অটো বায়োগ্রাফি অনুযায়ী তার জন্মের পর যখন নার্স তাকে তার মায়ের কাছে নিয়ে যায় তখন তার নিজের মা তাকে দেখে চমকে উঠেছিলেন এবং কিছু সময় পর্যন্ত নিককে কোলে পর্যন্ত নিতে সাহস পান নি। কিন্তু কিছু সময় পর সন্তানকে কিছু সময় পর সৃষ্টিকর্তার কোনো পরিকল্পনা মেনে নিয়ে কিছুক্ষণ পর কোলে তুলে নিয়েছিলেন। তার শরীরে রয়েছে পায়ের বদলে একটি বিকৃত পায়ের পাতা তার সাথে আঙ্গুলে মতো দুটো হাড়। যেটাকে নিজেই নিক মজা করে বলেন চিকেন ডার্মস স্টিক বলেন। আর তার সেই চিকেন ডার্মস স্টিক টাকে কাজে লাগিয়ে সে চুল আচড়ানো থেকে শুরু করে সাতার কাটা, কম্পিউটারে টাইপ করা, এমনকি ঢেউয়ের মধ্যে সমুদ্রের মধ্যে সার্ফিং ও করেন নিক। আজ নিক এতো বড় জায়গায় পৌছতে পারলেও নিকের ছোট বেলাটা ছিলো একটা দুস্বপ্নের মতো। যদিও তার আইকিউ নিয়ে কোনো রকম কোনো সমস্যা ছিলো না এবং বাকী সব দিকে থেকেই নিক সুস্থ্য একটা বাচ্চা ছিলো তবুও সে কোনো সাধারন বিদ্যালয়ে পড়ার কোনো সুযোগ পায় নি। ছোটবেলায় অন্য বাচ্চারা তাকে নিয়ে হাসাহাসি করতো, বিভিন্ন রকম অত্যাচার করতো, এবং বেশির ভাগ সময়ই নিককে কেউ প্রথম বার দেখে চমকে উঠতো। এগুলো থেকে একটি বাচ্চার মনে কি পরিমান প্রভাব পড়তে পাড়ে তা নিশ্চই বুজতে পারছেন। ছোট্ট নিক তার মা বাবা ডাক্তার আল্লাহ ইত্যাদি সবার কাছেই একটা প্রশ্ন করতো সে কেনো এমন আলাদা হয়ে জন্মালো। তার অন্যদের মতো হাত পা নেই কেনো? কিন্তু কারো কাছেই নিকের প্রশ্নের কোনো উত্তর ছিলো না। অন্যান্য বাচ্চারা যখন মাঠে খেলে বেড়াতো, সাইকেল চালাচ্ছে, ফুটবল খেলছে তখন নিজের জীবনে কোনো রকম কোনো আশার আলো নেই।

কিন্তু আসতে আসতে নিক তার পায়ের পাতার বিকৃত দুটি আঙ্গুল দিয়েই লিখতে শেখার চেষ্টা শুরু করে। পরে সে শুধু লিখতে না টাইপ করা থেকে শুরু করে নিজের সেইভ টা নিজে করতেও শিখে যায়। কিন্তু তার জীবনে এই এতো কষ্ট করে বেচে থাকার কোনো কারনই খুজে পাচ্ছিলেন না। বেশি সময় অন্য মনস্ক থাকার কারনে সে বেশ কয়েক বার সুইসাইড করারও চেষ্টা করেছিলেন। এরকম সময় যখন তার ১৭ বছর বয়স তখর তার মা তাকে খবরের পাতায় একটি পোষ্ট দেখান যেখানে তারই মতো একজন শারিরিক প্রতিবন্ধির কথা লেখা ছিলো। যেখানে সে তার জীবনের সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে সফল হতে পেরেছিলেন। সেখান থেকে নিকের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে যায়। নিক তার জীবনে বাচার মানে খুজে পায়। সে বুজতে পারে জীবনে বাচার দুটো রাস্তা হয়।

এক যেটা আমাদের জীবনের স্বপ্ন গুলো পূরন করার সম্ভাবনা থেকে দুরে নিয়ে যায় এবং দুই হলো যেটা আমাদের জীবনের স্বপ্ন গুলো পূরন করার আরও অনেক কাছে নিয়ে যায়। সেই খবরের কাগজের কলামটি পড়ে সিন্ধান্ত নেয় যে ঠিক যেভাবে তাকে সেই কলামটি বেচে থাকার অনুপেরনা দিয়েছিলো সেও ঠিক তার কথার মাধ্যমে তারই মতো অনেক মানুষ যারা জীবনে হয়তো হার মেনে নিয়েছে তাদেরকে উঠে দাড়াতে সাহায্য করবেন। আর এই উদেশ্যে নিক “Life Without Limbs”  নামে একটি নন প্রোফিট অর্গানাইজেশন কোম্পানী খুলেন। নিকের জীবনে স্বপ্ন ছিলো একজন সাধারন মানুষ জীবনে যা যা করতে পারে তার সব করা। একজন জীবন সঙ্গিনী, সুন্দর ছেলেমেয়ে, সুখী পরিবার আজ নিক তার সেই সমস্ত স্বপ্ন পূরন করেছেন। ২০১২ সালে নিক তার জীবন সঙ্গিনীকে খুজে পায়। আর বর্তমানে তাদের ৪ টি ছেলে মেয়েও রয়েছে। এছাড়া বক্তব্য দিতে নিক প্রায় ৬০ টির বেশি দেশে গুরেছেন।

নিক ২০০৫ সালে ইয়াং অস্ট্রেলিয়ান অ্যায়ার্ড এর জন্য নোমিনেটেড হন। এবং ২০০৯ সালে বাটাল ফ্লাই নামক একটা শর্ট ফিল্মে নিক অভিনয় করেন। এবং এই মুভি টি সেই বছর সেরা শর্ট ফিল্ম এর অ্যায়ার্ড পায়। আর নিক বেস্ট এক্টরে অ্যায়ার্ড পান। নিক ২০১০ সালে তার নিজের লেখা একটি বই “Life without Limits” নামের বই প্রকাশ করেন। যা পড়ে প্রায় ৩০ টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়। আর এগুলো সবই কিন্তু সম্ভব হয়েছে নিকের পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গির কারনে। যে দিন থেকে নিক তার জীবনের দৃষ্টি ভঙ্গি পরিবর্তন করেছেন সেদিন থেকেই কিন্তু তার জীবন একটি নতুন দিশায় গুড়ে গিয়েছিলো।

তাই নিক সব সময় বলেন “Attitude is Everything”. আপনাকে জীবনে যতই কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হোক না কেনো সবসময় আপনার কাছে এই একটা চয়েজ থাকেই নিজের দৃষ্টিভঙ্গি নির্বাচন করার। জীবনে যেই মানুষটা যার হাত পা নেই সে তার দৃষ্টিভঙ্গি পরির্বতন করে যদি এতো কিছু করতে পারেন তাহলে আপনি কেনো পারবেন না?

আপনার অজুহাত টা তাহলে কি?

MD KK REVIEW

Recent Posts

The Best Pet Cameras Available In The Market

Are you concerned about the pet activities your pet when you are not present at…

11 months ago

How an Accident Attorney Can Help After an Accident?

What Exactly Is an Accident Attorney? An accident attorney is a specialized legal professional who…

11 months ago

Top 10 Must-Read Books for Book Lovers in 2024

Top 10 Must-Read Books for Book Lovers in 2024 For book enthusiasts, each new year…

11 months ago

Why You Should Try Wearing a Shirt Over a Hoodie?

Introduction to Layering: The Shirt Over a Hoodie Trend Layering is a timeless design approach…

11 months ago

How Search Engine Marketing Can Boost Your Online Visibility

What is Search Engine Marketing? Search engine marketing (SEM) refers to the practice of using paid…

12 months ago

Harmony in the Home: Astrology and Vastu Wisdom for Balanced Living

The Path to Balanced Living: Astrology and Vastu Insights Welcome to the journey towards balanced…

1 year ago