পরীক্ষা ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ধারাবাহিক মূল্যায়নকে গুরুত্ব দিয়ে পরীক্ষা ও মূল্যায়নে সংস্কার করা হবে। এ লক্ষ্যে জাতীয় পরীক্ষা ও মূল্যায়ন কেন্দ্র নামের একটি সংস্থাও গঠন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মূল্যায়ন প্রতিষ্ঠান করার জন্য আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছি। শিগগিরই খসড়াটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে।
দিকে, করোনা চলে গেলেও অ্যাসাইনমেন্ট পদ্ধতি চালু থাকবে জানিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘করোনার পরও অ্যাসাইনমেন্ট পদ্ধতি চালু থাকবে। আমরা দেখেছি এটি একটি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি।’
গত ৯ আগস্ট মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের জারি করা অফিস আদেশে শিক্ষকদের বলা হয়, মুখস্ত বা হুবহু পাঠ্যবই থেকে লিখে অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি না করে অর্জিত জ্ঞান, দক্ষতা কাজে লাগিয়ে চিন্তা-ভাবনা, কল্পনাশক্তি, অনুধাবন ক্ষমতা ও স্বকীয়তাকেই দক্ষতাকেই মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সনদ ও মুখস্ত-নির্ভর পরীক্ষা বাদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের শ্রেণি মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলতে পরীক্ষা ব্যবস্থা ও মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তন আনা হবে।
পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ না রেখে সিজিপিএ-৪ (কিউমুলেটিভ গ্রেড পয়েন্ট এভারেজ) চালুরও উদ্যোগ নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গতবছর ৫ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, ‘জিপিএ-৫ একটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা। এর থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে আনতে কারিকুলাম বদলানো হচ্ছে।’
মন্ত্রণালয় জানায়, করোনার কারণে কারিকুলাম পরিমার্জন পিছিয়ে গেলেও মূল্যায়ন পদ্ধতি পরিবর্তনের মাঠ পর্যায়ের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। ধারাবাহিক মূল্যায়নেরই একটি নমুনা হলো অ্যাসাইনমেন্ট পদ্ধতি।
গতবছর ২১ অক্টোবর শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘ন্যাশনাল এক্সামিনেশন অ্যান্ড এসেসমেন্ট সেন্টার পাশের দেশগুলোতেও হয়ে গেছে। আমরা জাতীয় পরীক্ষা ও মূল্যায়ন কেন্দ্র করার পরিকল্পনা নিয়েছি। এর ধারাবাহিকতায় একটি আইনি সংস্থা গঠন করা হবে। পরীক্ষা ব্যবস্থা স্থায়ী একটা রূপ পাবে।’
গতানুগতিক সনদ ও পরীক্ষানির্ভরতা থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে আনার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ধারাবাহিক মূল্যায়নের পদ্ধতিগুলোতেই যেতে চাচ্ছি। পরীক্ষাভীতি, মানসিক ও শারীরিক চাপ চাই না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘মুখস্ত করে খাতায় তা উগরে দেওয়ার চেয়ে অর্জিত জ্ঞান দিয়ে নিজের মতো লিখলে তাকে বেশি নম্বর দিতে হবে। শিক্ষকদের তেমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মুখস্তবিদ্যা জীবনব্যাপী কাজে লাগে না।’
Thanks For Visit Our Website