আজকের এই পোষ্টে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো কিভাবে খুব সহজে বুদ্ধিমান ভাবে জীবন যাপন করা যায়। আর তাই সঠিক উপায় গুলো জানতে সম্পূর্ন পোষ্টটি পড়ুন।
ভাবুন আপনি ফুটবল খেলতে নামলেন আর সেখানে না কোনো ফাউল, না কোনো পেনাল্টি না কোনো নিয়ম কোনো কিছুই নেই তখন সেই মজার ফুটবল খেলাটাও নোংরা বা অশস্থিকর হয়ে উঠবে। খেলার আনন্দটাই নষ্ট হয়ে যাবে। যে কোনো খেলা সেটা হোক ক্রিকেট বা ফুটবল এত মজার এত সুন্দর হয়ে উঠে সেই খেলার নিয়ম গুলোর জন্য। একি রকম ভাবে আমাদের জীবনটাও একটা খেলার মতো যেখানে প্রতিদিন হার জিত প্রতিযোগিতা সমস্ত কিছু লেগেই থাকে। তাই জীবনের খেলাটাকেও সুন্দর করে তোলার জন্য দরকার কিছু নিয়ম আর এই পোষ্টে আমি সেই নিয়ম গুলো নিয়েই আলোচনা করবো।
Table of Contents
১. শরীরের দৃষ্টিভঙ্গিঃ
সব সময় শিরদারা সোজা রেখে কাদটাকে পিছনে ঠেলে দাড়ান দেখুন কোন ভঙ্গি বা স্টাইলটা আপনার ভালো লাগছে, কোনো চাকরির ইন্টারভিউ হোক বা কোনো ডেটই হোক না কেনো তা আপনার সব মিলিয়ে ভালো দেখানোর ক্ষমতা রাখে। তাছাড়া আপনি একটু লক্ষ করলেই দেখবেন আমাদের মনের অবস্থা অনুযায়ী আমাদের শরীরের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে থাকে। যখন আমরা এনার্জেটিক কনফিডেন্ট অনুভব করি তখন অনেকটা জায়গা জুড়ে নিজেকে ছড়িয়ে নিই আর অন্য দিকে যখন আমরা ভিত ক্লান্ত বা অসহায় অনুভব করি তখন নিজেকে গুটিয়ে নিই। মজার বেপার হলো মনের অবস্থা অনুযায়ী যেমন আমাদের শরীরের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায় ঠিক তেমনি জোড় করে আমাদের শরীরের দৃষ্টিভঙ্গি বদলিয়ে আমাদের মনের অবস্থাও বদলাতে পারি।
বৈজ্ঞানিক ভাবে এটা প্রমাণিত যে, যখন আমরা একটা কনফিডেন্ট লেবেল বেশ কিছু সময়ের জন্য আমাদের শরীরে ধরে রাখি তখন আমাদের ব্রেনের “ছেরাটনিন” যেটাকে হ্যাপি কেমিক্যাল বলা হয় সেটার খরন সাভাবিক ভাবেই বেড়ে যায় এবং “নোরেপিনেফ্রিন” যেটাকে দুঃখী কেমিক্যাল বলা হয় সেটার পরিমান কমে যায়। আপনি চাইলে এখনই এটা আপনার উপর পরীক্ষা করে দেখতে পারেন শিরদারা সোজা রেখে কাদ দুটোকে পিছনে ঠেলে দিয়ে কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে লক্ষ করুন আপনি একটু আগে মনের ভিতর কেমন অনুভব করছিলেন সেটা সত্যিই বদলাচ্ছে কি না ।
২. প্রিয়জনদের মতো নিজেরও খেয়াল রাখুনঃ
নিজের ঠিক ততোটাই খেয়াল রাখুন যতটা আপনার প্রিয়জনদের খেয়াল রাখার চেষ্টা করেন। এরকম অনেক বাবা রয়েছেন যারা প্রতিদিন নিজেরা প্রচুর সিরাগেট খেয়ে থাকেন কিন্তু তাদের ছেলে মেয়েরা যদি সিগারেট খেতে শুরু করে তাহলে তা কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারেন না। কেনো? কারণ তারা জানেন সিগারেট কতটা ক্ষতিকর শরীরের জন্য। প্রিয় বন্ধুর ব্রেকআপ হলে আমরা তাকে উপদেশ দেই সব কিছু নতুন করে শুরু করার জন্য কিন্তু নিজের ব্রেকআপ হলে তখন পুরোপুরি ভেঙে পড়ি। এই ভুলটা করা এবার বন্ধ করতে হবে। নিজের প্রিয়জনদের যেভাবে খেয়াল রাখি ঠিক তেমনি একই ভাবে নিজেরও খেয়াল রাখতে হবে।
৩. তাদের সাথে বন্ধুত্ব করুন যারা আপনার ভালো চায়ঃ
ছোটবেলায় আমাদের কোন খেলনাটা চাই সেটা আমাদের বন্ধুদের কি খেলনা আছে তা দেখেই বায়না করতাম। বড় হয়ে কোন ক্যারিয়ার বেছে নিবো তাও কোন বন্ধু কি করছে তার উপর ভিত্তি করে বেছে নিই। তার পর ছেলে মেয়েকে কোন স্কুল বা কলেজে ভর্তি করবো সেটাও বন্ধুরা কোথায় ভর্তি করছে তা দেখেই সিন্ধান্ত নিই। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে মা বাবার মতো বা তার থেকেও বেশি কোনো মানুষের প্রভাব থাকে তাহলে সেটা হলো আমাদের বন্ধুদের। তাই কাকে বন্ধু বলে আপন করে নিচ্ছেন সেটা সব সময় সর্তক ভাবে নির্ধারন করুন।
৪. নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা না করাঃ
নিজেকে সব সময় অন্যের সাথে তুলনা না করে গতকালের নিজের সাথে তুলনা করুন। এই বছরে আপনি হয়তো বার্ষিক পরীক্ষায় সি গ্রেড পেলেন সেখানে আপনার বন্ধ এ গ্রেপ পেলো, আপনি যদি আপনার বন্ধুর সাথে তুলনা করতে শুরু করেন তাহলে নিজেকে আপনার একজন বিফল বলে মনে হবে। কিন্তু যদি আপনি একটু ভালো ভাবে শুধু পড়াশোনা না জীবনের সব কিছু বিচার করেন তাহলে হয়তো দেখতে পাবেন এই বছর সারা দিন বইয়ে মুখ গুজে থাকায় দেখবেন আপনার বন্ধুর ওজর আগের থেকে ৫ কেজি বেড়ে গেছে, সাথে চশমার পাওয়ার টাও বেড়েছে। সেখানে আপনি প্রতিদিন নিয়ম করে ফুটবল খেলায় আপনার ওজন ৫ কেজি কমে গেছে এবং আগের বছরের তুলনায় শারীরিক এবং মানসিক ভাবে অনেক বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাই অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করা সম্পূর্ণ অর্থহীন। কারন আপনার জীবনের পরিস্থিতির সাথে অন্য কারো জীবনের পরিস্থিতি কখনই এক হবে না। তাই গতকালের আপনার সাথে আজকের আপনার তুলনা করাটাই সবচেয়ে অর্থপূর্ন।
৫. খারাপ ব্যবহারকে প্রস্রোয় দিবেন নাঃ
যে ব্যবহারটা আপনার অপছন্দ সেটা আপনার ছেলে মেয়েরা করলে কখনই তা প্রস্রোয় দিবেন না। আপনার ছেলে মেয়ের যা চাই তা সঙ্গে সঙ্গে হাতের কাছে না পেলেই রাগ দেখানো, অভন্দ্র ভাবে আচরণ করা এসব খারাপ অভ্যাসকে যদি আপনি ছোট থাকতেই সক্ত ভাবে শাসন করে ছোট থেকেই ঠিক না করার চেষ্টা করেন তবে ভবিষ্যতে বড় হওয়ার পর যখন ঘর ছেড়ে বাইরে বেড়িয়ে সেই একই আচরন অন্যদের সাথে করবে তখন অন্য লোকেরা তা কখনই প্রশ্রোয় দিবে না। তখন আপনার সন্তানকে হয়তো খুবই খারাপ সময় পার করতে হবে। তাই কেমন আচরন সমাজে গ্রহনযোগ্য এবং কেমন আচরন সমাজে গ্রহনযোগ্য না সেটা ছেলে মেয়েদের ছোটবেলা থেকেই সেখানো মা বাবা দের অন্যতম বড় দায়িত্ব।
৬. অন্যের সমালোচনা বন্ধ করুনঃ
অন্য কারো সমালোচন করার আগে ভাবুন আপনি নিজে নিখুত। সরকারের গরীবদের সাহায্য করা উচিৎ ভালো কথা। কিন্তু আপনারও তো প্রতিদিন ব্যায়াম করা উচিৎ। আপনি কি সেটা করেন? আমরা যদি সবাই এভাবে একে অপরের খুত খুজতে বসে যাই তাহলে সেটা নিরন্তন ভাবে চলতে থাকবে। তাতে পরিস্থিতির তো কোনো উন্নতি হবেই না বরং আরও খারাপ হয়ে যাবে। কারণ যখন আপনাকে কেউ দোষারোপ করে তখন কি আপনার ভিতর এই অনুভুতি জেগে উঠে যে না এটা আমাকে আজ থেকেই ঠিক করতে হবে। নাকি আপনার ভিতর প্রতিরক্ষা বোধ জেগে উঠে যে আপনি আপনার খুতটাকে ভুল প্রমাণ করে বরং যে আপনাকে দোষারোপ করছে তার কোনো একটা ভুল সামনে আনার। তাই যদি আপনি সত্যিই এই পৃথিবীতে পরিবর্তন দেখতে চান, তাহলে অন্যের সমালোচনা করার পরিবর্তে নিজেকে ঠিক করা দিয়েই শুরু করুন।
1 thought on “কিভাবে বুদ্ধিমান উপায়ে জীবন যাপন করা যায়”