ব্রণ শব্দটি শুনলেই আমাদের মনে ভেসে উঠে বয়সন্ধী কালের ছেলে বা মেয়ের ছোট বড় বিভিন্ন দাগে ভরা একটি মুখ। দুই অক্ষরের ছোট্ট একটি শব্দ ব্রণ। অনেকের কাছে একটি দুশ-স্বপ্নের নাম কিন্তু এটি আসলেই কি একটি দুশ-স্বপ্ন? আমি বলবো না। কারণ- সঠিক সময় সঠিক চিকিৎসায় এ ব্রণ কিন্তু সম্পূর্ণ রুপে ভালো করা সম্ভব। তাই ব্রণের কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে জানতে সম্পূর্ণ পোষ্টটি পড়ুন।
ব্রণ বয়সন্ধী কালের খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। মেডিকেল টার্মে একে একমি বলা হয় আবার অনেকেই একে পিমপলস বলে থাকেন। তবে যে নামেই ডাকি না কেনো কি কারনে হচ্ছে এই ব্রণ আসুন জেনে নিই।
একটি ছেলে বা মেয়ে যখন পিউবার্টি বা বয়সন্ধী কালে আসে তখন এন্ডোজেন হরমোন আমাদের শরীরে সেবাছিয়াস গ্লেন বা তৈল গন্থীকে স্টিমোলেশন দেয়। যার ফলে সেম অফ ছিক্রেশন হয়। এই অতিরিক্ত ছেবাম আমাদের হেয়ার ফলিকলে জমা হয় সেই সাথে আমাদের ত্বকের কেরাটিন বা মৃত কোষ এবং কিছু ব্যাকটেরিয়ার ফলে রিয়েকশন তৈরি হয় এবং যেখান থেকে তৈরি হয় ব্রণ। মহিলাদের ক্ষেত্রে পলিসিস্টিক অভারিয়ান ছিলড্রোম নামে একটি হরমোনাল সমস্যা আছে। সেখানে দেখা যায় ব্রণের সাথে সাথে ওজন বেড়ে যাওয়া, অনিয়মিত মাসিক এবং মুখে অতিরিক্ত লোম হয়। অনেকেই আবার কিছুটা ফর্সা হবার জন্য বাজার থেকে বিভিন্ন নাইট ক্রিম বা রং ফর্সাকারী ক্রিম কিনে ব্যবহার করছেন। এতে ত্বকের অপূরন্য ক্ষতির সাথে সাথে হচ্ছে ব্রণ।
এতো কিছুর পরও সবার মনে আর একটি প্রশ্ন থেকেই যায় সেটি হলো ব্রণ কি শুধু মুখেই হয় নাকি শরীরে অন্য জায়গাতেও হতে পারে?
ব্রণ মুখে ছাড়াও শরীরের অন্য যেকোনো জায়গায় হতে পারে। সাধারনত যেসব জায়গায় সেবাসিয়াস গ্লেন বা তৈল গন্ধী গুলো বেশি থাকে সেই সব খানেই কিন্তু ব্রণ হয়। সেক্ষেত্রে মুখ ছাড়াও কিন্তু বাহুর উপরের অংশ পিঠে, বুকে আবার অনেকের মাথা এবং ঘাড়ের দিকে ব্রণ হয়ে থাকে। শুরুর দিকে সাধারণত এটি লাল দানা বা গোটা হিসেবে উঠে পরবর্তীতে ইনফেকশনের কারণে পুচ হয়ে মুখ সাদা হয়ে যায়। অনেকের ক্ষেত্রে ব্যাথাও থাকে। কারো কারো ক্ষেত্রে কালো হয়ে যেতে পারে। যাদের এলার্জিক টেনডেনছি আছে তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় চুলকানি থাকে। তবে এতো কিছুর মাঝেও সবচেয়ে আশার কথা হলো চিকিৎসার মাধ্যমে ব্রণ সম্পূর্ন রুপে ভালো হয়ে যায়।
ব্রণের চিকিৎসায় সাধারনত প্রথমেই ত্বকের ধরন অনুযায়ী একটি অয়েল কন্টোল ফেস ওয়াশ বা সাবান দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া আক্রান্ত স্থানে ব্যবহারের জন্য কিছু ত্রিম বা জেল এবং সিবিয়ার ক্ষেত্রে কিছু মুখে খাওয়ার ঔষধ দেওয়া হয়। এসব ঔষধের মধ্যে রয়েছে ইনফেকশন কন্টোলের জন্য এন্টিবায়োটিক। সেবাসিয়াস গ্লেন্ডের একটিভিটি কমানোর জন্য রেটিনার জাতীয় ঔষধ এবং হরমোনাল সমস্যার ক্ষেত্রে হরমোন দিয়েও চিকিৎসা হয়ে থাকে। এছাড়াও কিছু উপদেশ মেনে চলতে হয়। নিচে দুটি উপদেশ দেওয়া হলোঃ
১। পিমপলস বা ব্রণ থেকে বাচার জন্য সব সময় রোদ এড়িয়ে চলুন। রোদে গেলে আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সানস ক্রিম ব্যবহার করবেন।
২। আর একটি উপদেশ হলো ত্বকে হাত দিবেন না বা ব্রণে চাপাচাপি করবেন না। কারণ ব্রণে হাত দিলে এছাড়া যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করেন তবে আক্রান্ত স্থানে দাগ, রক্ত ও স্কার হয়ে যেতে পারে। যার চিকিৎসা পদ্ধতি কিন্তু একটু জটিল হয়ে থাকে। তাই আপনার ব্রণের সমস্যা থাকলে অবশ্যই একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
1 thought on “ব্রণ কেনো হয় এবং এর সঠিক চিকিৎসা কি?”