বাসা থেকে বের হয়েছেন হঠাৎ মনে হয়েছে দরজাটা কি ঠিক ভাবে লক করেছেন তো, চুলা কি এখনও জ্বলছে, ফ্যানের সুইচ কি অন করা, অনেকেই মনে করার চেষ্টা করেও মনে করতে পারছেন না। আবার এমনও হয় চেয়ার থেকে উঠার পর মনে থাকে না কেনো চেয়ার থেকে উঠেছেন। অনেক দিন পর কারো সাথে দেখা তার চেহারা চিনতে পারছেন কিন্তু তার নাম মনে নেই। এমনটা বার বার হলে বুঝবেন আপনার ভুলে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। এই প্রবণতা যে শুধু আপনার আছে তা কিন্তু নয়। আমাদের আশে পাশে থাকা নানা মানুষ এই ভুলে যাওয়ার প্রবণতার সাথেই বসবাস করছেন। এক্ষেত্রে কি কোনো সমাধান নেই, অবশ্যই আছে সেগুলো কি জানতে পোষ্টটি সম্পূর্ন দেখুন বা পড়ুন।
Table of Contents
স্মৃতিশক্তি কেনো হারায়?
আমাদের ভুলে যাওয়ার সমস্যা অনেক সময় বংশগত হতে পারে। তবে আপনার স্মৃতিশক্তি অনেকটা নির্ভর করে আপনি কি খাচ্ছেন, আপনার জীবনযাত্রা কেমন তার উপর। সাধারণত মানসিক চাপ, বিষন্নতা, উদ্বেগ জনিত রোগ থাকলে কিংবা দীর্ঘ সময় ধরে ঘুমের সমস্যা হলে আমাদের স্মৃতি শক্তিতে এর বিরুপ প্রভাব পড়ে। সেই সাথে ভিটামিন বি-১২ এর অভাবে পানি শুন্যতা, থাইরয়েড এর সমস্যা, ধুমপান, মদ পানের অভ্যাস কিংবা ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকেও হতে পারে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা। হৃদরোগ, হাই ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিকস, হরমোনার ভার্সাম্যহীনতার কারনেও স্মৃতি লোপ পেতে পারে। এছাড়া বয়স হওয়ার সাথে সাথেও আমাদের স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে থাকে। আশার কথা হলো আপনি যেকোনো বয়সেই আপনার স্মৃতি শক্তি বাড়াতে পারেন।
আসুন জেনে নেওয়া যাক মনে রাখার ৯ টি সহজ উপায়ঃ
খাদাভ্যাসঃ
মস্তিষ্কে যেনো জম না পড়ে তার জন্য কি খাচ্ছেন সেটা খুবই জরুরি। আমাদের খাবারের শতকরা ২০ শতাংশ শরকরা শক্তি আমাদের মস্তিষ্কে যায়। মস্তিষ্কের খাবার হচ্ছে অক্সিজেন এবং গ্লুকোজ। তাই বিষেশজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে এমন খাবার বেছে নিন জাতে পর্যাপ্ত পরিমান এন্টি-অক্সিজেন আছে। যত পারুন ফল ও শাক-সবজি খান । সম্ভব হলে প্রতিদিন এক কাপ গ্রিন টি খেতে পারেন। তার সাথে যুক্ত করতে হবে ওমেগা ৩ ফেটিক এসিড যুক্ত খাবার যা সামুদ্রিক মাছ এবং বাদামে পাবেন। আর সবচেয়ে জরুরি হলো অতিরিক্ত চিনি, কার্বো-হাইড্রেট যুক্ত খাবার এড়িয়ে যাওয়া সেই সঙ্গে ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখাও জরুরি।
পর্যাপ্ত ঘুমঃ
আমাদের মস্তিষ্কের মাঝা মাঝি ইউ আকৃতির একটা অংশ আছে একে হিপোকেম্পাস বলে। এই হিপোকেম্পাস হলো আমাদের মেমোরি বা হার্ডডিস্ক। মানুষ যখন ঘুমায় তখন মস্তিষ্কের এই অংশটিতে নতুন নিউরন কোষ জন্মায়। যার কারণে স্মৃতি প্রখর থাকে। তাই ৭ থেকে ৯ ঘন্টা নিরবিচ্ছিন্ন ঘুমের প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন গভেষকরা। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে যান এবং একটা নিদিষ্ট সময় ঘুম থেকে উঠুন। সেটা ছুটির দিন হলেও। এজন্য সন্ধার পর চা কফি খাবেন না। ঘুমের কমপক্ষে ১ ঘন্টা আগে মোবাইল, ল্যাপটপ এই রকম ডিভাইস থেকে দুরে রাখতে হবে।
ব্যায়ামঃ
আপনি যদি আজকে থেকেই নিয়মিত ব্যায়াম শুরু করেন বিশেষ করে হার্টের ব্যায়াম এবং শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম তাহলে আপনা স্মৃতিশক্তি হাড়ানোর আশংকা ৫০ শতাংশ কমে আসবে। মার্কিন এক গভেষনায় এমন প্রমান মিলেছে। ব্যায়ামের ফলে বেশি মস্তিষ্কে হারে অক্সিজেন ও গুল্কোজ সরবরাহ হয়। গভেষকরা গভেষনা করে দেখেছেন কোনো কিছু শিখার ৪ ঘন্টা পর ব্যায়াম করলে তা বেশি মনে থাকে। কারণ ব্যায়াম করলে শরির থেকে বেশি প্রোটিন নির্গত হয়, মস্তিষ্কের যে অংশে স্মৃতি রক্ষায় কাজ করে প্রোটিন সেই অংশ টিকে আরও চাঙ্গা করে তোলে। আরেকটা গভেষনায় দেখা গেছে কোনো হেটে হেটে মুখস্ত করলে তা বেশি মনে থাকে।
ধুমপান ও মধ্যপান ছাড়ুনঃ
গভেষকরা বলছেন আমাদের মস্তিষ্ক তখনই ভালো ভাবে কাজ করবে যখন এতে যথেষ্ট পরিমানে অক্সিজেন প্রবাহিত হবে। কিন্তু ধুমপানের ফলে যেসব দমনির মধ্য দিয়ে অক্সিজেন পৌছায় সেই গুলো বাধাগস্ত হতে পারে তাই ধুমপান ছাড়ার পরামর্শ দিচ্ছেন মানসিক বিষেসঙ্গরা। এছাড়া অতিরিক্ত মদপান করলে মস্তিষ্কের হিপোকেম্পাস অংশ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই অতিরিক্ত মদপানের ব্যাপারেও সাবধান।
সামাজিক হনঃ
গভেষনায় দেখা গেছে যারা তার পরিবার ও বন্ধবান্ধবের সাথে নিয়মিত যোগাযোগে থাকেন না তাদের স্মৃতি শক্তি দুর্বল হতে শুরু করে। একারনে বিষেশঙ্গরা বলছেন মানুষের সাথে যোগাযোগ বাড়ান এবং সেটা মুখোমুখি যোগাযোগ মোবাইল ফোনে নয়। নিজের পরিবার এবং বন্ধবান্ধবের সাথে নিয়মিত সামনাসামনি যোগাযোগ ও কথা বলুন, কোথাও ঘুরতে যান, আড্ডা দিন, সবার সাথে মিশে হাসাহাসি করে আনন্দে মেতে থাকার চেষ্টা করুন। ভালো হয় যদি শিশুদের সাথে সময় কাটাতে পারেন। আর যারা আপনাকে রাগিয়ে দেয়, মানসিক চায় দেয় তাদেরকে কাছে গেসতে দিবেন না।
মানসিক চাপ কমানঃ
আপনি এখন প্রশ্ন করতে পারেন চাইলেই কি মানসিক চাপ কমানো সম্ভব? মানসিক রোগ বিশেষঙ্গরা বলছেন সম্ভব। আপনি হয়তো আপনার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা, উদ্বেগ এর কারণ গুলো রাতারাতি ঠিক করতে পারবেন না। কিন্তু আপনি এমন কিছু করতে পারেন যার কারনে স্টেস হরমোন কম নিসরন হয়। প্রথমত ব্যাক্তিগত কাজ হোক বা পেশা কোথাও বাড়তি চাপ নিবেন না। আবশ্যিক কাজ গুলো অবশ্যই করবেন। কিন্তু সেটা সীমার বাইরে গেলে সেটা না বলতে শিখুন। এক সাথে অনেক কাজ না করে বিরতি দিয়ে দিয়ে করুন। কাজ যেমন জরুরি তেমনি অবসরও এই দুটোর মধ্যে ভারসাম্য আনতে হবে। মানসিক বিষেশঙ্গরা অনুভুতি প্রকাশ করতে বলেছেন। হাসি, কান্না, রাগ, বিরক্তি কোনো কিছুই চেপে রাখবেন না। তাছাড়া বই পড়া, দাবা খেলা, সুডুগু, পাজেল, রুবস্কিপ এর মতো খেলা মস্তিষ্ককে সার্প করে বা ঠিক রাখে। চেষ্টা করুন নতুন কিছু শিখতে। সেটা হোক রান্না, খেলা, গাড়ি চালানো, ছবি তোলা ইত্যাদি এমন কিছু যেটা আপনি উপভোগ করবেন। এতে আপনা মানসিক চাপ কমবে এবং স্মৃতি শক্তি ভালো থাকবে।
ধ্যানঃ
নিয়মিত ধ্যান বা মেরিডেশন করলে আপনা স্বাস্থ্যের উপর বেশ ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। এটি মস্তিষ্কের নিউরন কোষ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই এক গভেষনায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত ধ্যান করেন তাদের স্মৃতি শক্তি অনেক ভালো থাকে।
ইন্দ্রিয় দিয়ে মনে রাখুনঃ
কোনো কিছু মনে রাখতে এর ছবি, রং, গন্ধ, স্পর্শ এবং স্বাদের সাথে তথ্য মিলেয়ে মনে রাখার চেষ্টা করুন। লিখুন কারণ কোনো কিছু লিখলে তা মস্তিষ্কেও লেখা হয়ে যায়, আপনি যা মনে রাখতে চান তা উচ্চ স্বরে পড়ুন। এছাড়া পুরো বিষয়টাকে যদি আপনি ছোট ছোট অংশে ভাগ করে ছন্দে ছন্দে মিলিয়ে নিয়ে মুখস্ত করেন তাহলে সেটা মনে থাকবে। সবচেয়ে ভালো হয় শব্দের প্রথম অক্ষর দিয়ে শব্দ তৈরি করতে পারলে। যে তথ্য আপনার আগে থেকেই মনে আছে সেটা দিয়েও মনে রাখতে পারেন।
সুর ও সঙ্গীতঃ
গান শোনার সময় আমাদের মস্তিষ্ক সক্রিয় হয়ে উঠে এটা গভেষনায় দেখা গেছে। নিয়মিত ভালো ভালো গান আপনাকে অনেক খারাপ এবং দুশ্চিন্তা থেকে দুরে থাকতে সাহায্য করবে। অবসর সময়ে গান শুনুন, গানের অনুষ্ঠান দেখতে যান।
কিন্তু এরপরও যদি দেখেন আপনি সাভাবিক বিষয় গুলো ভুলে যাচ্ছেন তাহলে অবশ্যই একজন ভালো এবং প্রশিক্ষিত মানসিক ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
Hola! I’ve been following your site for a while now and finally got the
bravery to go ahead and give you a shout out from Austin Texas!
Just wanted to say keep up the excellent job!