বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। রবিবার (১০ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু করেছে।
এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ আলাদাভাবে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, ১০ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইট (www.shed.gov.bd), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের ওয়েবসাইট (www.dshe.gov.bd) এবং বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) ওয়েবসাইট (www.banbeis.gov.bd) অনলাইন এমপিও অ্যাপলিকেশন (Online MPO Application) শিরোনামে প্রদর্শিত লিংক এর মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতাধীন দেশের অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি পাওয়া নিম্ন-মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (স্কুল অ্যান্ড কলেজ), উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, স্নাতক (পাস) পর্যায়ে এমপিওভুক্তির জন্য অনলাইন আবেদন ফরম পূরণের নির্দেশিকা অনুযায়ী এমপিও আদেন করা যাবে।
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন কারিগরি (এসএসসি (ভোক), দাখিল (ভোক), এইচএসসি (বিএম) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা-দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির আবেদন অনলাইনে গ্রহণ করা হবে।
এছাড়া কারিগরি (ডিপ্লোমা-ইন-এগ্রিকালচার), কারিগরি (ডিপ্লোমা-ইন-ফিশারিজ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির আবেদন অনলাইনে গ্রহণ শুরু হয়েছে।
যেভাবে আবেদন করবেন
অনলাইন আবেদন ফরমের তারকা চিহ্নিত ফিল্ডগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে।
অনলাইনে আবেদন করার আগে এমপিওভুক্তির জন্য প্রার্থিত স্তরে অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি, অধিভুক্তির আদেশের সত্যায়িত কপি পিডিএফ ফরমেটে স্ক্যান করে সংগ্রহ করে রাখতে হবে।
এছাড়া এমপিওভুক্তির জন্য প্রার্থিত স্তরে সর্বশেষ অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি, অধিভুক্তি নবায়ন আদেশের সত্যায়িত কপি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বিভাগ খোলার অনুমতিপত্রের সত্যায়িত কপি প্রয়োজন হবে।
প্রতিষ্ঠানের ভূমির মালিকানা সংক্রান্ত পর্চা (খতিয়ান), নামজারি এবং ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের হালনাগাদ রশিদের কপি, এমপিওভুক্তির জন্য প্রদত্ত তথ্যের সঠিকতা সম্পর্কে প্রতিষ্ঠান প্রধানের প্রত্যয়নপত্রটি ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিংবডি বা অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দ্বারা প্রতিস্বাক্ষরিত হতে হবে।
আবেদন ফরমে দেওয়া তথ্যের সঠিকতা সম্পর্কে প্রতিষ্ঠান প্রধানের স্বাক্ষরিত ঘোষণাপত্র অনলাইন আবেদনে পিডিএফ জমা দিতে হবে।
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক ছবি (৯৬০×৪৭৬ পিক্সেল) জেপিজি ফরমেটে তৈরি করতে হবে।
অনলাইন আবেদন ফরম পূরণের ধাপ
১. মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইট, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইট, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের ওয়েবসাইট এবং ব্যানবেইস এর ওয়েবসাইটের মধ্যে যেকোনও একটির লিংকে প্রবেশ করে এমপিওভুক্তির জন্য Online আবেদন ফরমে ক্লিক করতে হবে।
২. Window-টি খোলার পর নির্দিষ্ট জায়গায় আপনার প্রতিষ্ঠানের EIIN প্রদান করতে হবে। এরপর স্ক্রিনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানাসহ অন্যান্য তথ্যাদি দেখা যাবে।
৩. প্রদর্শিত তথ্যাদি সঠিক থাকলে নিচে সাবমিট (Submit) বাটন-এ ক্লিক করতে হবে। এরপর নতুন Window প্রদর্শিত হবে এবং প্রতিষ্ঠানের মোবাইল নম্বরে এসএমএস-এর মাধ্যমে One Time Password (OTP) প্রদান করা হবে। এসএমএস এর মাধ্যমে প্রাপ্ত OTP নির্দিষ্ট ফিল্ডে এন্ট্রি করতে হবে এবং Submit বাটন এ ক্লিক করতে হবে।
৪. এমপিও সফটওয়্যারের অনলাইন আবেদন ফরমের প্রথম অংশের (সেকশন ১: প্রতিষ্ঠানের সাধারণ তথ্য) ফিল্ডগুলো পূরণ করতে হবে।
প্রতিষ্ঠানের যেকোনও একটির ধরণ: নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ এবং স্নাতক (পাস) কলেজ ইত্যাদি নির্বাচন করতে হবে। প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে কোন স্তরে এমপিওভুক্ত আছে তা নির্বাচন করতে হবে।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদীয় এলাকার নাম ও নম্বর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যে সংসদীয় এলাকায় অবস্থিত সে এলাকার নাম ও নম্বর নির্বাচন করতে হবে।
উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ এবং স্নাতক (পাস) কলেজসহ বিভিন্ন বিভাগ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে স্বীকৃতি অনুযায়ী বিভাগ নির্বাচন করতে হবে।
প্রশাসনিক এলাকার ধরণ, প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ধরণ, ভৌগোলিক অবস্থান, প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যয়নরত অধিকাংশ শিক্ষার্থী কোন অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত—এই চারটি ফিল্ডের জন্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য উত্তর নির্বাচন করতে হবে।
প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো যে জমির ওপর অবস্থিত তা ওই প্রতিষ্ঠানের নামে পর্চা (খতিয়ান)/নামজারি আছে কিনা নির্বাচন করতে হবে।
যুদ্ধাপরাধী ব্যক্তির নামে অথবা ফৌজদারি অপরাধে ২ বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নামে নামকরণ করা কিনা তা নির্বাচন করতে হবে।
প্রতিষ্ঠানটি অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি, অধিভুক্তি প্রাপ্ত কিনা নির্বাচন করতে হবে।
অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি বা অধিভুক্তি হালনাগাদ নবায়ন ১০ অক্টোবর পর্যন্ত আছে কিনা নির্বাচন করতে হবে। এরপর Save বাটন-এ ক্লিক করতে হবে।
এমপিও সফটওয়্যারের অনলাইন আবেদন ফরমের দ্বিতীয় অংশের (সেকশন-২: এমপিওভুক্তির জন্য আবেদনের তথ্য) ফিল্ডগুলো পূরণ করতে এমপিওভুক্তির জন্য শিফট নির্বাচন করতে হবে।
এমপিওভুক্তির জন্য আবেদনের স্তর নির্বাচন করতে হবে। এরপর Next Page বাটন এ ক্লিক করতে হবে। ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালের শিক্ষার্থীর তথ্য প্রদান করতে হবে। স্নাতক (পাস) স্তরের ক্ষেত্রে ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালের শিক্ষার্থীর তথ্য প্রদান করতে হবে।
অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি বা অধিভুক্তির হালনাগাদ তথ্য প্রদান করতে হবে। প্রার্থিত স্তরে স্বীকৃতি বা অধিভুক্তির তারিখ, প্রার্থিত স্তরে সর্বশেষ স্বীকৃতি অধিভুক্তির নবায়নের তারিখ, প্রার্থিত স্তরে স্বীকৃতি বা অধিভুক্তির মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।
সংযুক্তির বিবরণ
সংশ্লিষ্ট সংযুক্তি ঘরে নির্ধারিত কপিগুলো পিডিএফ আকারে আপলোড করতে হবে—
এমপিওভুক্তির জন্য প্রার্থিত স্তরে অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি বা অধিভুক্তির আদেশের সত্যায়িত কপি, এমপিওভুক্তির জন্য প্রার্থিত স্তরে সর্বশেষ অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি বা অধিভুক্তি নবায়ন আদেশের সত্যায়িত কপি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড বা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বিভাগ খোলার অনুমতিপত্রের সত্যায়িত কপি, প্রতিষ্ঠানের ভূমির মালিকানা সংক্রান্ত পর্চা (খতিয়ান)/ নামজারি এবং ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের হালনাগাদ রশিদের কপি, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক ছবি (960×476 Pixel Size) JPG ফরমেটে তৈরি করতে হবে।
এছাড়া আবেদনের জন্য নির্ধারিত ফরমে এমপিওভুক্তির প্রদত্ত তথ্যের সঠিকতা সম্পর্কে প্রতিষ্ঠান প্রধানের প্রত্যয়নপত্রটি ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিংবডি বা অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষরিত হতে হবে।
নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চ মধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চমাধ্যমিক কলেজ পর্যায়ের ক্ষেত্রে ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালের এবং স্নাতক (পাস) স্তরের ক্ষেত্রে ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালের তথ্য, প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে প্রত্যয়নপত্র সংযুক্ত করতে হবে।
দ্বিতীয় শিফট এমপিওভুক্ত করার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় শিফটের শিক্ষার্থীর সংখ্যা, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও উত্তীর্ণের সংখ্যা বিবেচিত হবে। কোনোভাবেই প্রথম শিফটের শিক্ষার্থী, পরীক্ষার্থী ও উত্তীর্ণের সংখ্যা দ্বিতীয় শিফটের এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হবে না।
এক বা একাধিক স্তরে এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করা যাবে। একাধিক স্তরে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রথম স্তরের আবেদন সম্পন্ন করার পর Submit Application বাটন এ ক্লিক করতে হবে। এরপর EIIN দিয়ে নতুনভাবে লগইন (Login) করে পরবর্তী স্তরের জন্য আবেদন সম্পন্ন করার পর Submit Application বাটন-এ ক্লিক করতে হবে।
Submit Application বাটন-এ ক্লিক করার পর আবেদন সম্পন্ন হবে। আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরণ হলে ‘ধন্যবাদ আপনার আবেদনটি সফলভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। আপনি যদি আরও কোনও স্তরে আবেদন বা দাখিলকৃত আবেদন সংশোধন করতে চান তাহলে পুনরায় লগইন করে সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদন করুন।’ Message প্রদর্শিত হবে। প্রতি স্তরে আবেদন সম্পন্ন করার পর প্রিন্ট কপি সংরক্ষণ করতে হবে।
এমপিওভুক্তির আবেদন Submit করার পর আবেদনের তথ্য প্রয়োজনে সংশোধন (Edit) করা যাবে। সেক্ষেত্রে Online আবেদন ফরম-এ পুনরায় EIIN দিয়ে লগইন (Login) করে প্রথমবারের আবেদনের মতো সংশ্লিষ্ট ফিল্ডের তথ্য সংশোধন (Edit)-এর পর Submit Application বাটন-এ ক্লিক করে প্রিন্ট কপি সংরক্ষণ করতে হবে।
এমপিওভুক্তির আবেদন ফরম পূরণের ক্ষেত্রে যেকোনও সহযোগিতার জন্য 01571737033, 01552492776, 01918890308, 0193658385৬, 01723207077, 01928217987 নম্বরে এবং ই-মেইল: mpo@banbeis.gov.bd -তে যোগাযোগ করা যাবে।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানের মোবাইল নম্বর সংশোধনের জন্য উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার প্রত্যয়নসহ মহাপরিচালক, ব্যানবেইস বরাবর আবেদন mpo@banbeis.gov.bd-তে প্রেরণ করতে হবে।
অনলাইন এমপিও সফটওয়্যারে প্রদর্শিত পরীক্ষার ফল সংক্রান্ত তথ্য সংশ্লিষ্ট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত। অনলাইন আবেদন ফরমে প্রদর্শিত পরীক্ষার ফলাফল সংশোধন/পরিবর্তনের সুযোগ নেই।
Thanks For Visit Our Website