বিল গেটস একবার বলেছিলেন পরীক্ষায় আমি কিছু বিষয়ে ফেল করে যেতাম কিন্তু আমার বন্ধু সব কয়টা বিষয়ে পাশ করে যেতো। এখন আমার সেই বন্ধু মাইক্রোসফটের একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেব চাকরী করে আর আমি এখন মাইক্রোসফটের মালিক। এমনকি ড. এ.পি.জি আব্দুল কালামও বলেছিলেন দেশের সবচেয়ে মেধাবী মাথা পাওয়া যেতে পারে কোনো ক্লাসের লাষ্ট বা শেষের বেঞ্চে। তো এনাদের বলার প্রকৃত অর্থ কি? সেটাই আজ আমরা জানবো এই পোষ্টে:
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থ্যা অনুযায়ী ছোটবেলা থেকেই আমাদের ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান, পরিবেশ পরিচয় ইত্যাদি সমস্ত কিছু শেখানো হলেও জীবনে চলার জন্য সবচেয়ে জরুরী যেই জিনিসটা সেই টাকার ব্যাপারে কোনো কিছুই শেখানো হয় না। বিদ্যালয় গুলোর প্রধান লক্ষ্য কিভাবে একটি চাকরী যোগার করা যায় তাই শেখানো হয়। কিন্তু কখনও এভাবে শেখানো হচ্ছে না যে কিভাবে একটি কোম্পানী খুলে অন্যদের চাকুরী দেওয়া যায়।
১. তিন ধরনের ইনকাম এর মধ্যে তফাত টা বুঝতে শিখুনঃ
টাকা উপার্জনের যত রকম উপায় হতে পারে সেই সব গুলোকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ
১.১ নিজে কাজ করে টাকা ইনকাম করা
নিজে কাজ করে টাকা ইনকাম করা বলতে বোঝায় যেমন কোনো কোম্পানীতে চাকুরী করা বা নিজের একটি ছোট দোকান চালানো। সারা জীবন একটা ফিক্সড বা লিমিটেড ইনকাম আর সারা জীবন টাকা রোজগারের চিন্তায় নিরন্তন পরিশ্রম করে চলা। যেটার জন্যই স্কুল কলেজে ছেলে মেয়েদের তৈরি করা হয়। তাই সাভাবিক ভাবেই বেশির ভাগ লোক ইনকামের জন্য এই পথটাকেই বেছে নেয়। আর জীবনে কখনও Financial Independence হাসিল করে উঠতে পারে না। ফাইনান্সিয়াল ইন্ডিপেনডেন্স হাসিল করা মানে যখন আপনাকে টাকা রোজগার করার জন্য আর কাজ করার দরকার পড়ে না।
১.২ নিজের টাকাকে কাজে লাগিয়ে টাকা রোজগার করাঃ
নিজের টাকা কাজে লাগিয়ে ইনকাম যেমন শেয়ার মার্কেটে টাকা বিনিয়োগ করা। এটা নিজে কাজ করে টাকা ইনকাম করার থেকে অনেক ভালো হলেও এটাতে রিস্ক বেশি থাকায় এটাকে সব চেয়ে ভালো উপায় বলা চলে না। তাছাড়া এই পথেও ফাইনান্সসিয়াল ইন্ডিপেনডেন্স হাসিল করতে অনেক বছর সময় লেগে যায়।
১.৩ নিজের সম্পদকে কাজে লাগিয়ে টাকা ইনকাম করাঃ
টাকা রোজগার করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো পেসিব ইনকাম বা নিজের এসেট বা সম্পদকে কাজে লাগিয়ে ইনকাম করা। এসেট বলতে এমন কিছুকে বোঝায় যেটা থেকে মাস গেলেই আপনার পকেটে টাকা ডুকে। যেমন বাড়ি ভাড়া দিলে যে টাকা পাওয়া যায় বা বড় বড় ব্যবসা যেমন ফেসবুক, এ্যামাজন, কে. এফ. সি ইত্যাদি কোম্পানির মালিক যদি কয়েক মাসের ছুটিতেও চলে যায় তাহলেও সে সমান টাকা পেতে থাকবে। এর মাধ্যমে আপনি স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করতে পারবেন এবং ইনকামও করতে পারবেন।
২. নিজের প্রোফেশন টা বেছে নেওয়ার আগে পজিশন টা বেছে নেওয়া বেশি প্রয়োজনঃ
টাকা উপার্জন করার যত ধরনের পেশা আছে সেগুলো ক্যাশ ফলো কোয়ারেন্ট এ চার ভাগে ভাগ করা হয়। এই ক্যাশ ফলো কোয়ারেন্টের বাম পাশে রয়েছে E এবং S কেটেগরী। E মানে হলো Employee । এনাদের কাছে সবচেয়ে জরুরী জিনিস হলো সিকিওরিটি। এনাদের যদি বেশি টাকা রোজগার করার প্রয়োজন বোদ হয় তাহলে আর একটু বেশি বেতনের চাকরি খোজার কষ্ট টুকু করেন। এনাদের কাছে শিক্ষার অর্থ হলো কোনো একটা বিষয়ে ভালো দক্ষ হয়ে মোটা অংকের বেতনের চাকুরী যোগার করা।
আর S মানে হলো Self- Employed. এনারা রিস্ক নিতে ওতোটাও ভয় পায় না তাই এনারা নিজে নিজের বস হয়ে কাজ করতে ভালোবাসেন। কিন্তু এনাদের মাঝে একটা এটিটিউড কাজ করে তিনি যে কাজ টা করছেন তা তার থেকে ভালো আর কেউ করতে পারে না। ফলে এরা অন্য কাউকে নিজের কাজে নিতেও চায় না। একা একা নিজে নিজে যতটা সময় কাজ করেন তার বদলে যেটুকু রোজগার হয় সেটুকু তেই এনাদের ইনকাম সীমাবদ্ধ থাকে। যেমন ধরুন কোনো ডাক্তার, উকিল, ফ্রিল্যান্সার।
আর এই ক্যাশ ফলো কোয়ারেন্টের ডান পাশে রয়েছে B এবং I কেটেগরি। B মানে হলো Business Owner. এনারা Employee এবং Self-Employed দের কাজে লাগিয়ে নিজের ব্যবসাকে একটা Autopilot মুডে নিয়ে চলে আসে। ফলে S কেটেগরির মতো শুধু যেটুকু সময় কাজ করে শুধু সেটুকু সময়ের জন্য আয় করেন না বরং কাজ না করলেও এনাদের সারাক্ষণ আয় হতেই থাকে।
আর I মানে হলো Investor. এনারা হলেন সব থেকে বেশি চালাক। এনারা ব্যবসায়িক দের কাজে লাগিয়ে নিজেরা কোনো কাজ না করেই সারাক্ষণ টাকা ইনকাম করতে থাকে। এনারা নিজের এমনকি কখনও কখনও অন্যের টাকা নিয়ে সেটা ব্যবসায়িক দের তৈরি করা ব্যবসায় বিনিয়োগ করে হাতের উপর হাত রেখে সারাক্ষণ টাকা আয় করতে থাকেন। ব্যবসায়িকদের তো Employee দের ম্যানেজ করার কাজ টুকু করতে হয় কিন্তু এদের তাও করতে হয় না।
উপর থেকে দেখলে দেখা যায় যে যারা চাকুরী করে তারা সবচেয়ে নিরাপদে থাকে আর যারা বিনিয়োগ করে তারা সবচেয়ে বেশি বিপদে থাকে কিন্তু বাস্তবে যারা চাকুরী করেন তারা সবচেয়ে বেশি বিপদে থাকে এবং যারা বিনিয়োগ করে তারা সবথেকে বেশি নিরাপদে থাকে। কারন যারা চাকুরী করেন তাদের নিজেদের ইনকামের উপর কন্টোল সব থেকে কম থাকে আর বিনিয়োগকারীদের সবচেয়ে বেশি। একজন ব্যবসায়ী একজন চাকরকে যখন ইচ্ছা কাজ থেকে বের করে দিতে পারেন। তখন তার ইনকাম সর্ম্পর্ণ জিরোতে চলে আসবে। কিন্তু একজন বিনিয়োগ কারীর হাজার খানা বিনিয়োগ করার মতো রাস্তা থাকে।
৩. একটা জিনিসে অনেক বেশি পারদর্শী না হয়ে অনেক বিষয়ে অল্প পারদর্শী হওয়াটা ভালোঃ
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাটা এমন ভাবে বানানো হয়েছে যে ছাত্র ছাত্রীরা কোনো একটা নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর দক্ষ হয়ে বের হয়। যেমন কেউ ডাক্তার, কেউ গনিতে ভালো, কেউ ইংলিশে ভালো এভাবে। ফলে এদের বের হওয়ার পর দুটো অপশন থাকে হয়তো Employee or Self-Employed হয়ে জীবিকা নির্বাহ করা। তাই যারা প্রথম ব্যাঞ্চের ছাত্র বা ছাত্রীদের তাদের জীবন Employee or Self-Employed হয়েই কেটে যায়। কিন্তু যারা শেষ বেঞ্চের ছাত্র-ছাত্রী তারা পড়াশোনার পাশাপাশি জীবনের আরও নানা বিষয়ে পারদর্শী হয়ে উঠে। আর একজন সফল ব্যবসায়ী হয়ে উঠার জন্য শুধু একটা বিষয়ে জ্ঞান থাকলে হবে না।
It’s nearly impossible to find educated people in this particular topic, however, you sound like you know what you’re talking about!
Thanks